Tuesday, November 11, 2025
Homeজাতীয়আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থিতা বাতিল, গেজেট প্রকাশ

আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থিতা বাতিল, গেজেট প্রকাশ

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে দিতে পারবে, এমন বিধান রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। সোমবার রাতে ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ গেজেট প্রকাশ করেন।

এতে পোস্টারে প্রচার নিষেধ, ব্যানার, বিলবোর্ড করা গেলেও তা হবে পরিবেশবান্ধব, করা যাবে না যানবাহন সহকারে মিছিল বা শোডাউন ও মশাল মিছিল- প্রভৃতি বিধান আনা হয়েছে। আচরণবিধি ভাঙলে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল, অন্যান্য বিধি না মানলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং একই কারণে দলের জন্য দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আনা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা

এবার প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের বিধান আনল কমিশন। এক্ষেত্রে প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা দল বা প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি উক্তরূপে প্রচার-প্রচারণা শুরুর পূর্বে রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করতে হবে। প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনও বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সব প্রকার ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না। প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোনও জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী স্বার্থ হাসিল করার জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত সব কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশ করার পূর্বে সত্যতা যাচাই করতে হবে। রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনও ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনও প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন কিংবা সুনাম নষ্ট কবার উদ্দেশ্যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনও মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদন (এডিট ) করে কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই দ্বারা কোনও মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর কোনও আধেয় (content) তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করতে পারবেন না।

এছাড়াও কোনও দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোনও প্রচারণা করতে পারবেন না। ভোটের প্রচারে থাকছে না পোস্টারের ব্যবহার। একজন প্রার্থী তার সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না; যার দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট। নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনও ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনও প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবেন। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না।

বিলবোর্ডে শুধু যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড, সেগুলোতে আলোর ব্যবহার করা যাবে। বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ নয়, প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্বর্তীকালীন/তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে তারা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না।

এদিকে প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। প্রচার সামগ্রীতে পলিথিন, রেকসিনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলে রাখতে হবে। আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রার্থী ও দলের কাছ থেকে দিতে হবে অঙ্গীকারনামাও। অন্যদিকে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে ইসি। গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা, রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থার বিধানও আনা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments