Monday, November 3, 2025
Homeআন্তর্জাতিকআগামী বছরেই পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে দেখা যাবে চীনের সাবমেরিন

আগামী বছরেই পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে দেখা যাবে চীনের সাবমেরিন

আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ পাকিস্তানের নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ বলেছেন, ২০২৬ সালেই তার দেশের নৌবাহিনীর বহরে প্রথম চীনা নকশার সাবমেরিন যুক্ত হয়ে কার্যক্রম শুরু করবে। চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস- কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।

অ্যাডমিরাল আশরাফ জানান, চীনের সঙ্গে আটটি হ্যাংগর-ক্লাস সাবমেরিন পাওয়ার যে চুক্তি রয়েছে তা সঠিকভাবেই এগোচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম চারটি সাবমেরিন নির্মিত হচ্ছে চীনে এবং বাকি চারটি তৈরি হবে পাকিস্তানের করাচি শিপইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসে। এতে পাকিস্তানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তান ইতোমধ্যে তিনটি সাবমেরিন চীনের ইয়াংজি নদীতে পরীক্ষা চালানোর জন্য নামিয়েছে। চলতি বছর চীনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সাবমেরিন সফলভাবে পানিতে নামানো হয়েছে যা দুই দেশের নৌ-সহযোগিতায় একটি বড় মাইলফলক বলে অভিহিত করেন অ্যাডমিরাল আশরাফ। তিনি আরও জানান, শুধু সাবমেরিন নয়, চীন থেকে প্রাপ্ত টাইপ ০৫৪এ/পি মাল্টিরোল ফ্রিগেটও পাকিস্তান নৌবাহিনীর সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এসব যুদ্ধজাহাজ বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা, অ্যান্টি-সাবমেরিন অপারেশন ও সমুদ্র নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

অ্যাডমিরাল আশরাফের ভাষায়, উত্তর আরব সাগর ও বিস্তৃত ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসব প্ল্যাটফর্ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যও জরুরি। গত মে মাসে পাকিস্তান বিমান বাহিনী চীনের নির্মিত জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। এই ঘটনা সামরিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করে এবং পশ্চিমা যুদ্ধবিমানের তুলনায় চীনা বিকল্প কতটা প্রতিযোগিতামূলক তা নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়।

অ্যাডমিরাল আশরাফ বলেন, চীনা প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে মানানসই এবং দীর্ঘদিন ধরে তা নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি আধুনিক যুদ্ধের চাহিদা বিবেচনায় ড্রোন সিস্টেম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্রযুক্তিতে চীনের সঙ্গে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর কথা জানান তিনি।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২৪ সময়ে চীনের মোট অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশই গেছে পাকিস্তানে। পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান বলেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক শুধু হার্ডওয়্যারের লেনদেন নয়, এটি দুই দেশের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। আগামী দশকে এই সহযোগিতা প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময়, গবেষণা ও সামুদ্রিক শিল্প উন্নয়ন খাতে আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অ্যাডমিরাল আশরাফ জানান, উন্নত প্রযুক্তি, মানববিহীন সিস্টেম, সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে দুই দেশের সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে । তিনি আরও বলেন, উন্নত ফ্রিগেট ও সাবমেরিন যুক্ত হওয়ার ফলে পাকিস্তান নৌবাহিনীর সমুদ্রসীমা টহল, বহুমাত্রিক যুদ্ধ সক্ষমতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়া ও প্রশিক্ষণ দুই নৌবাহিনীর পারস্পরিক সামরিক সক্ষমতা আরও গভীর করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments