আলোর যুগ স্পোর্টসঃ অহেলিয়া চুয়ামেনির শট মায়োর্কার একজনের গায়ে লাগার পর যে বাঁক নিল, সেটা ফেরানোর কোনো উপায় থাকল না। গোলরক্ষকের নাগালের অনেক বাইরে ক্রসবার আর পোস্টের কোণা দিয়ে বল জড়াল জালে! এই গোলই গড়ে দিল ব্যবধান। মায়োর্কাকে হারিয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়াল রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগার ম্যাচে শনিবার (১৩ এপ্রিল) ১-০ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
৩১ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনা ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে। প্রথমার্ধে তিন শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে না পারা রিয়াল উন্নতি করে বিরতির পর। এই সময়ে ১৩ শটের ৯টিই লক্ষ্যে রাখে তারা। অন্যদিকে, ম্যাচে ৪৪ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা মায়োর্কা ছয় শটের দুইটি রাখে লক্ষ্যে।
ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগোর মতো প্রথম পছন্দের বেশ কয়েকজন একাদশে না থাকলেও প্রতিপক্ষের মাঠে শুরু থেকে বল দখল ও আক্রমণে আধিপত্য করে রিয়াল। কোপা দেল রের রানার্সআপ মায়োর্কা মনোযোগ দেয় রক্ষণে। তবে গোলের প্রথম ভালো সুযোগ পায় তারাই। ৩১তম মিনিটে কর্নার থেকে আন্তোনিও রাইলিয়োর হেড চমৎকার রিফ্লেক্সে কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। তখনও বিপদ ছিল, স্বাগতিকদের কেউ নাগালে পাওয়ার আগেই বল দূরে পাঠিয়ে দেন জুড বেলিংহ্যাম।
দুই মিনিট পর একটুর জন্য গোল পাননি বেলিংহ্যাম। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ইংলিশ মিডফিল্ডারের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি মায়োর্কা গোলরক্ষক পেদ্রাগ রাইকোভিচ। তবে ক্রসবারে লেগে বেরিয়ে যায় বল। ৩৯তম মিনিটে সাদামাটা একটি ক্রস লাফিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টায় তালগোল পাকান লুনিন। তবে পেছনেই থাকা আন্টোনিও রুডিগারের তৎপরতায় কোনো বিপদ ঘটেনি। মায়োর্কার কেউ সুযোগ নেওয়ার আগেই বুক দিয়ে নামিয়ে গোলরক্ষকের কাছে বল পাঠান জার্মান ডিফেন্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুযোগ পান বেলিংহ্যাম। ৪৭তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে তার শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন রাইকোভিচ। পরের মিনিটে কিছুই করার ছিল না তার। ডি-বক্সের অনেক বাইরে থেকে চুয়ামেনির ওই পার্থক্য গড়ে দেওয়া গোল। ৫৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল ব্রাহিম দিয়াসের সামনে। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গায় থেকেও তিনি শট নেন রাইকোভিচ বরাবর।
৬১তম মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে দুই দল। মায়োর্কা ফরোয়ার্ড আব্দন প্রাতসের শট চমৎকার স্লাইডে ঠেকান নাচো। পাল্টা আক্রমণে লুকা মদ্রিচের কাছ থেকে ছয় গজ বক্সে বল পান দিয়াস। তার প্রথম স্পর্শ ছিল বেশ বাজে, সেই সুযোগটা নিয়েই গোলের সুবর্ণ সুযোগটি ব্যর্থ করে দেন মায়োর্কা গোলরক্ষক।
৭২তম মিনিটে গোলের আরেকটি ‘নিশ্চিত’ সুযোগ হাতছাড়া করে রিয়াল। গোললাইন থেকে ফেদে ভালেভেরদের শট ঠেকিয়ে দেন মাতিয়া নাস্তাসিচ। গোলরক্ষক ছিলেন পেছনে, উরুগুয়ে মিডফিল্ডারের হাতে সময় ছিল যথেষ্ট। তবুও তিনি সার্বিয়ান ডিফেন্ডার বরাবর শট নেন, যা অনায়াসেই ঠেকান নাস্তাসিচ। তিন মিনিট পর চমৎকার সেভে ব্যবধান ধরে রাখেন লুনিন।
২৫ গজ দূর থেকে সের্হি দারদের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্যর্থ করে দেন রেয়াল গোলরক্ষক। শেষ দিকে রক্ষণে বাড়তি মনোযোগ দেওয়া রিয়াল অন্তিম সময়ে বেঁচে যায় একটুর জন্য। মাঝমাঠ থেকে আসা বল গ্লাভসে নেওয়ার চেষ্টায় তালগোল পাকান লুনিন। তাকে প্রবল চাপে রাখা ভেদাত মুরিকির সামনে ছিল ফাঁকা জাল। বেশি তাড়াহুড়ায় শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ম্যাচে এটাই ছিল শেষ শট!