আলোর যুগ প্রতিনিধিঃ বহুল আলোচিত মিশরের বিলিয়নিয়ার দোদি আল ফায়েদের পিতা মোহাম্মদ আল ফায়েদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। দোদি আল ফায়েদ ১৯৯৭ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সাথে প্যারিসে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। শুক্রবার ফায়েদের পরিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
পরিবারের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মিসেস মোহাম্মদ আল-ফায়েদ, তার সন্তান এবং নাতি-নাতনিরা নিশ্চিত করছেন মোহাম্মদ আল-ফায়েদ ৩০ আগস্ট (বুধবার) বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তিনি তার প্রিয়জনদের দ্বারা বেষ্টিত একটি দীর্ঘ এবং পরিপূর্ণ অবসর উপভোগ করেছেন। পরিবার এই সময়ে তাদের পারিবারিক একান্ত নিজস্বতার প্রতি সম্মান জানানোর অনুরোধ করেছে।’
মোহাম্মদ আল ফায়েদের জন্ম মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরে। সেখানে তিনি ঠাণ্ডা পানীয় বিক্রির মধ্য দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরে সুইং-মেশিন সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি রিয়েল এস্টেট, শিপিং এবং নির্মাণ কাজ করে পরিবারের ভাগ্য বদলে ফেলেন। প্রথমে এসব কাজ করেন মধ্যপ্রাচ্যে। পরে ইউরোপে। এক সময় তিনি কিনে নেন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর হ্যারডস, ফুটবল ক্লাব ফুলহ্যাম এবং প্যারিসে রিটজ হোটেল।
ব্রিটেনে সব সময়ই তিনি ছিলেন বহিরাগত। কয়েক দশক ধরে তার বাড়ি ছিল লন্ডনে। কিন্তু সেই দেশটি তাকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ জন্য বৃটিশ সরকারের সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। তিনি বার বার হুমকি দেন ফ্রান্সে চলে যাওয়ার। এ জন্য তাকে সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব ‘লিজিয়ন অব অনার’ পুরস্কার দেয়া হয়।
তাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়, যখন ১৯৯৭ সালে তার পুত্র দোদি আল ফায়েদ তখনকার প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এরপর তার ছেলে ও ডায়ানাকে হত্যা করা হয়েছে এই বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য ১০টি বছর ব্যয় করেন আল ফায়েদ। কোনো রকম প্রমাণ না দিয়েই তিনি দাবি করেন মৃত্যুকালে ডায়ানার পেটে ছিল সন্তান। ডায়ানা যাতে একজন মুসলিমকে (দোদি আল ফায়েদ) বিয়ে করতে না পারেন এবং বাচ্চা নিতে না পারেন, সেজন্য তাকে হত্যার জন্য ব্রিটিশ নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।