ক্রাইম অনুসন্ধান ডেস্ক : গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে কোরআনের পাতা ছিড়ে ওয়াশরুমের কমোডে ফেলে এবং কোরআনের উপর স্যান্ডেল দিয়ে পিটিয়ে মুসলিমদের উপর ক্ষোভ ঝাড়েন সেফাতুল্লাহ। এরপরই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সাধারন মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ এসে সেফাত উল্লাহ সেফুদা পবিত্র কোরআন শরিফকে অবমাননা করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী): সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ এসে সেফাত উল্লাহ সেফুদা পবিত্র কোরআন শরিফকে অবমাননা করার প্রতিবাদে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুসল্লিদের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার বাদ জুমা কোহিনূর হুদা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা উপজেলার হাজারীহাট বাজারে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কোহিনূর হুদা ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি নুরুল করিম জুয়েল, মেডিকেল অফিসার ডা. আফম আবদুল হক, কোম্পানীগঞ্জ ইমাম পরিষদ সমিতি সেক্রেটারি আলী আহম্মেদ জমিরি, বিশিষ্ট সমাজসেবক শরীয়ত উল্যাহ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, মুসলমানের সবকিছুর ঊর্ধ্বে তার ঈমান ও ইসলাম। সেফাত উল্লাহ সেফুদা কর্তৃক আল্লাহ, রাসূল (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও অপমান করার অপরাধে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়ার দাবি জানান।
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী): সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের আলোচিত-সমালোচিত প্রবাসী সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা কোরআনকে অবমাননা করার প্রতিবাদে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার মৌডুবি বাজারে এ মিছিল করা হয়।
স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্যোগে মৌডুবি বাজার জামে মসজিদে আসর নামাজ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। এতে দুই শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। মিছিল শেষে একটি প্রতিবাদসভা করা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন নাসিম আরেফিন, জহিরুল ইসলাম টুকু, আইজুদ্দিন মাস্টার, শাহবুদ্দিন আহম্মেদ মৃধা, শাহিন মৃধা ও মহসিন উদ্দিন খান প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা আল-কোরআন অবমাননাকারী সেফাত উল্লাহ সেফুদা দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফ ও মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করেন সেফাত উল্লাহ সেফুদা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।
নিজের ফেসবুক থেকে লাইভে এসে তিনি এসব অশ্লীল মন্তব্য করলে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বেশির ভাগ মানুষ তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন যেন ভবিষ্যতে কেউ কোনো ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে না পারে।
এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের দায়ে অস্ট্রিয়া প্রবাসী সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন জার্মান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মুন্না।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদা পবিত্র কোরআন শরীফকে অবমাননা করায় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে ‘সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা যে চার দফা দাবি উত্থাপন করে সেগুলো হলো:
১.সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে।
২.সেফুদা যদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয় তবে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে হবে সরকারকে।
৩.আর সেফুদা যদি মানসিক ভারসাম্যহীন না হয়ে ভন্ড হয়, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে এবং
৪.ইউটিউব সহ সকল সোশ্যাল মিডিয়ায় তার প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম মহিম বলেন, ‘সেফুদা পবিত্র কোরআন শরীফ এর পাতা ছিঁড়ে কমোডে ফেলে একটি জঘন্য অপরাধ করেছে, সে ইসলামকে জঘন্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে, সে এই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে, তাই আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তাকে যেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়, সেই সাথে তাকে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
বাংলা বিভাগের ৪৬ তম আবর্তনের জহিরুল ইসলাম ফয়সাল বলেন, ‘সেফুদার কারনে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, শুধু তাই নয় সেফুদা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের সমাজে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে, সে মদ নিয়ে লাইভে এসে তরুণ সমাজকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে, সে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এদেশের মুসলমানদের ব্যাহত করেছে, বাংলাদেশ সরকার যেন দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য তাকে আইনের অধীনে নিয়ে আসে।’
আবার সেফুদাকে ধরিয়ে দিলে ২ লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষনা করা হয়েছে আওমীলীগের এক নেতার পক্ষ থেকে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফ ও মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) অবমাননাকারী সিফাত উল্লাহ সেফুদাকে ধরিয়ে দিলে ২ লাখ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল।
সম্প্রতি সেফুদা এক ভিডিওতে পবিত্র কোরআনকে অবমাননা করেছে। কোরআন নিয়ে ইচ্ছামত গালাগালী করেছে এবং কোরআনের পাতা ছিড়ে টয়লেটে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। একই সাথে আমাদের প্রিয় নবী (স:) এর অবমাননা করেছে।
পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননাকারী সিফাত উল্লাহ সেফুদাকে ধরিয়ে দিলে ২ লাখ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল।
সোহেল চৌধুরীর স্ট্যাটাস নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননাকারী সিফাত উল্লাহ সেফুকে দেশ এবং বিদেশের মাটিতে যারা আইনের আওতায় সোপর্দ করতে পারবেন, তাদের জন্য ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে।’
প্রসঙ্গত, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফ ও মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করেন সেফাত উল্লাহ সেফুদা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।
নিজের ফেসবুক থেকে লাইভে এসে তিনি এসব অশ্লীল মন্তব্য করলে সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বেশির ভাগ মানুষ তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন যেন ভবিষ্যতে কেউ কোনো ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে না পারে।
এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের দায়ে অস্ট্রিয়া প্রবাসী সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন জার্মান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মুন্না।